দিনহাটায় সীমান্তে বাংলাদেশিদের ঠেকিয়েছিল BSF, তারপরই BGB-র সাথে হল বৈঠক


📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: উত্তবরবঙ্গে ভারত-বাংলদেশ সীমান্তে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, দিনহাটায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গীতালদহের নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পদক্ষেপ করেছিল বিএসএফ। এই ঘটনায় ৪ বাংলাদেশি নাগরিক জখম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল প্রথম আলোর রিপোর্টে। আহতদের নাম – শামসুল আলম (৬০), জাবেদ আলি (৫৫), তাজুল ইসলাম (৪০) ও কাসেম আলি (৫০)। সেই ঘটনার পরে নাকি সীমান্তে বিএসএফ এবং বিজিবির পতাকা বৈঠক হয়। সেখানে বাংলাদেশিদের প্রহারের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় দু’পক্ষের।দাবি করা হয়েছিল, অনুপ্রবেকারী সন্দেহে বাংলাদেশিদের সীমান্ত এলাকায় ঠেকিয়েছিল বিএসএফ। এদিকে উত্তেজনা ছড়াতেই সীমান্তে বিএসএফের বেশ কয়েকটি গাড়ি পৌঁছে গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছিল সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে। এদিকে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়, উত্তেজনাপূর্বক পরিস্থিতিতে নাকি বাংলাদেশিদের ‘অন্যায্য’ ভাবে মারধর করেছিল বিএসএফ। এই নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মহম্মদ শাকিল আলম এবং ভারতের পক্ষে ৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল অমিত শাহ উপস্থিত ছিলেন।জানা গিয়েছে, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক শামসুলকে দেখে বিএসএফ জওয়ানরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, সেখানে সে কী করছে। এরপরে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অভিযোগ, অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে শামসুলকে বন্দুকের বাট দিয়ে প্রহার করেন বিএসএফ জওয়ান। এতে নাকি শামসুলের হাতে গুরুতর চোট লাগে। পরে উত্তেজনা ছড়ায়। বাংলাদেশে দিক থেকে অনেকে ধারাল অস্ত্র নিয়ে সীমান্তে এসে জড়ো হয়। পরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। বিজিবি বাংলাদেশিদের শান্ত করে ফেরত পাঠায় সীমান্ত থেকে। ততক্ষণ পর্যন্ত বিএসএফের একাধিক গাড়ি সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। ভারতীয় জওয়ানরা বাংলাদেশিদের ঠেকিয়ে রেখেছিলেন।এর আগে সম্প্রতি মালদার সুকদেবপুরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ছড়িয়েছিল। গত ১৮ জানুয়ারি মালদায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বাংলাদেশিরা চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই সময় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের রুখে দিয়েছিল বিএসএফ। সুকদেবপুরবাসীদের অভিযোগ, ইউনুস জমানাতেই বাংলাদেশিরা ভারতীয় ভূখণ্ডে এসে লুটপাট চালাতে শুরু করেছে। তেহট্ট এলাকাতেও কৃষিজমিতে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছিল বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে। অপরদিকে উত্তর দিনাজপুরে অনপ্রেশের ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার। এদিকে উত্তরে জলপাইগুড়িতেও সীমান্তে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে। সীমান্ত নিয়ে নদিয়াতেও উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।এদিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কোদালিয়া নদীর অংশে ৫ কিলোমিটার এলাকায় নাকি বিজিবি নিজেদের ‘দখল প্রতিষ্ঠা’ করেছিল সম্প্রতি। এই ৫ কিলোমিটার জমি নিয়ে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে দেখা দেয় মতপার্থক্য। উল্লেখ্য, এই কোদালিয়া নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় দিয়ে। এরপর কিছু দূর বয়ে তা মহেশপুরের মাটিলা সীমান্ত দিয়ে আবার ভারতের রানাঘাটে প্রবেশ করে। এখানেই প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ‘মতপার্থক্য’। উল্লেখ্য, পূর্ব পাকিস্তান আমলে ১৯৬১ সালের মানচিত্রের বরাত দিয়ে বিজিবি দাবি করে, ওই ৫ কিলোমিটার এলাকা তাদের। আবার বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭৫ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী এই পাঁচ কিলোমিটার এলাকা ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্গত।

error: Content is protected !!