রাজঘাটে প্রণবের স্মৃতিসৌধ বানাবে মোদী সরকার, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ শর্মিষ্ঠার

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিসৌধ বানাবে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ জন্য নয়াদিল্লির রাজঘাট তথা রাষ্ট্রীয় স্মৃতি পরিসরে জমি চিহ্নিত করল কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক।

এ ব্যাপারে সরকারের থেকে চিঠি পেয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে ধন্যবাদ জানালেন প্রণবের মেয়ে তথা প্রাক্তন কংগ্রেস মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়।

কেন্দ্রে বর্তমান শাসক দল তথা বিজেপির সঙ্গে বরাবর মতাদর্শগত ফারাক ছিল প্রণবের। কিন্তু একই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিসরে বিজেপির বহু নেতার সঙ্গে তাঁর বন্ধু সম্পর্ক ছিল। এক সময়ে অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রণবের প্রতিবেশী ছিলেন। তখন এক সঙ্গে প্রাতঃভ্রমণে বেরোতেন বাজপেয়ী ও প্রণব।

দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠার আগে থেকেই মোদীর সঙ্গেও প্রণবের একটা সখ্য তৈরি হয়। তা বন্ধু সম্পর্ক বললে সরলীকরণ হবে, বরং অনেকটাই ছিল অভিভাবকের মতো। প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার দুদিন পরই রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন মোদী। সেই সাক্ষাতে বলেছিলেন, কাজে কর্মে কোনও ভুল হলে তক্ষুণি ডেকে পাঠাবেন, আমি চলে আসব।

মোদী-প্রণবের এই বোঝাপড়া কংগ্রেসের দুঁদে রাজনীতিকদের অনেকেরই পছন্দের ছিল না। সেই তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দেয়, পরের আরও একটি ঘটনা। নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতরে গিয়ে প্রণবের বক্তৃতা দেওয়া। সেই সময়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রণবের পদক্ষেপের সমালোচনার করেছিলেন তাঁর মেয়ে শর্মিষ্ঠাও। সেই সমালোচনা অবশ্য প্রণব বিশেষ গায়ে মাখেননি। তিনি মনে করতেন, মতাদর্শের ফারাক থাকলেও আলোচনার দরজা খোলা রাখা উচিত। এমন উদার রাজনেতা তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে ভারত রত্ন সম্মানে সম্মানিত করেছিল মোদী সরকার। এবার নয়াদিল্লিতে তাঁর স্মৃতিসৌধর জন্য জমিও বরাদ্দ করল।

এ ব্যাপারে সরকারের থেকে চিঠি পেয়ে মঙ্গলবার সাউথ ব্লকে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন প্রণবের মেয়ে শর্মিষ্ঠা। পরে টুইটে শর্মিষ্ঠা লিখেছেন, “সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাবার জন্য স্মৃতিসৌধ বানাবে। এ খবর জানার পর প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলাম। আরও বড় আনন্দের বিষয় হল, এর জন্য আমরা কোনও আবেদন জানাইনি। প্রধানমন্ত্রীর এই উদারতা আমাকে ছুঁয়ে গেছে”।

শর্মিষ্ঠার কথায়, “বাবা বলতেন, রাষ্ট্রীয় সম্মান কখনও চাওয়া উচিত নয়, তা প্রাপ্য হলে নিজেই এসে পৌঁছাবে। আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাবার স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে সেই কাজটি করেছেন। বাবা যেখানে আছেন, সেখানে প্রশংসা বা সমালোচনার কোনও প্রভাব পড়ে না। কিন্তু তাঁর কন্যার জন্য, এই মুহূর্তে অনুভূতিকে শব্দে প্রকাশ করা সত্যিই সম্ভব নয়”।

error: Content is protected !!