📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: সম্প্রতি দাবা খেলায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করেছেন ডি গুকেশ। মায়ের একটা পরামর্শই তাঁকে সাফল্যের রাস্তা দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন এই দাবারু। গুকেশের কথায়, তাঁর মা পদ্মাকুমারী সবসময় একটাই কথা বলেন যে তিনি নিজের ছেলেকে অবশ্যই একজন মহান দাবাড়ু হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু, তারও আগে একজন মানুষের মতো মানুষ হিসেবে দেখতে চান তিনি।গুকেশ বললেন, ‘আমার মা সবসময় আমাকে একটাই কথা বলেন। আমি একজন মহান দাবাড়ু, এটা শুনে তিনি হয়ত খুশি হবে। কিন্তু, আমি যদি মানুষের মতো মানুষ হতে পারি, তাহলে সেটা ওঁর কাছে গর্বের বিষয় হবে। এই কথাটাই আমি সবসময় মেনে চলি। আমি জানি, আমাকে অনেক কাজ করতে হবে। কিন্তু, আগামীদিনে আরও ভাল দাবাড়ু হওয়ার চেষ্টা আমি চালিয়ে যাব। তারও আগে নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করব।’
ডিং লিরেনকে পরাস্ত করে তিনি সর্বকনিষ্ঠ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাব অর্জন করেছেন ডি গুকেশ। তবে গুকেশের এই সাফল্যের যাত্রাপথ একেবারেই সহজ ছিল না। বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ছেলের পাশে থাকার জন্য বাবা রজনীকান্তকে ENT সার্জনের কেরিয়ার হেলায় হারাতে হয়েছে। গুকেশের মা পদ্মকুমারী একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট। তাঁর একার উপার্জনেই গোটা সংসার চালাতে হয়।গুকেশের কথায়, ‘আমি আর্থিকভাবে একেবারেই স্বচ্ছ্বল ছিলাম না। আমার বাবা-মাকে প্রচুর স্ট্রাগল করতে হয়েছে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে আমাদের টাকা-পয়সার এতটাই টান পড়েছিল যে বাবা-মায়ের বন্ধুরা আমাকে স্পনসর করেছিল। আমার লাইফস্টাইলও ওঁরা বদলেছেন যাতে আমি টুর্নামেন্ট খেলতে পারি। আমার জীবনে বাবা-মায়ের এই অবদান কোনওদিন ভুলতে পারব না।’
বিশ্বজয়ী হয়েই কেঁদে ফেলেছিলেন গুকেশ। ঘরের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন গুকেশের বাবা। পাশে ছিলেন মেন্টাল কন্ডিশনিং কোচ প্যাডি আপটন। যিনি ধোনির বিশ্বজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। সেখানে গিয়ে আর আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা পারেনি ভারতীয় দাবাড়ু। বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন তিনি। আপটনও জড়িয়ে ধরেন গুকেশকে। পরে মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন তিনি।
তাঁর সাফল্যের পরই নেটদুনিয়ায় ভাসছে ৭ বছর পুরনো ভিডিও। একটি সাক্ষাৎকারে গুকেশকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তাঁর স্বপ্ন কী? আত্মবিশ্বাসী দাবাড়ু উত্তর দিয়েছিলেন, সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে বিশ্বজয়ী হওয়া। সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। আর সেই সঙ্গেই সোশাল মিডিয়ায় চর্চায় আরও একটি প্রশ্ন। বিশ্বজয়ী হয়ে কত টাকা পাবেন গুকেশ? চ্যাম্পিয়নশিপের প্রতিটি ক্লাসিকাল ম্যাচ জিতলে পাওয়া যায় ২ লক্ষ ডলার। গুকেশ তিনটি ম্যাচ জেতায় পেয়েছেন ৬ লক্ষ ডলার। অন্যদিকে দুই ম্যাচ জিতে লিরেন পেয়েছেন ৪ লক্ষ ডলার। ২৫ লক্ষ ডলার মোট পুরস্কার মূল্যের বাকিটা ভাগ হয়েছে দুজনের মধ্যে। অর্থাৎ সেখানে গুকেশের প্রাপ্তি ৭.৫ লক্ষ ডলার। সব মিলিয়ে ১৩.৫ লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।