চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা নিয়ে ফিরবে চন্দ্রযান ৪! নতুন প্রযুক্তি আনছে ইসরো

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: ২০০৮ সালে প্রথম চাঁদে অভিযান করে ভারত। শ্রীহরিকোটা থেকে প্রথম একটি মহাকাশযান উৎক্ষেপন করা হয়। এবার ২০ বছর পর ২০২৮ সালে অত্যাধুনিক চন্দ্রযান মহাকাশে পাঠাবে ভারত। এবার এই মিশনের নাম লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন বা লুপেক্স। জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে এই অভিযান করবে ইসরো।

ইসরো জানায়, অনিয়ন্ত্রিত গতিই চন্দ্রযান-২ এর ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। নির্ধারিত সময় গতিবেগ কমাতে পারেনি এই মহাকাশযান। অবতরণের সময় বেশ কিছু সফটওয়ারের ত্রুটিও ছিল। ইসরো জানিয়েছে, সেই কারণে সফট ল্যান্ড করতে পারেনি ল্যান্ডারটি।

চন্দ্রযান ৩-এ সেই সব ভুল করেনি ইসরো। ইসরোর চন্দ্রযান ৩ একাধিক সাফল্য এনে দেয় ইসরোর বিজ্ঞানীদের। প্রথমবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখে চন্দ্রযান ৩। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে সফট ল্যান্ডিং করে চন্দ্রযান ৩। এই মিশনে বিশেষ ভূমিকা নেয় ল্যান্ডার বিক্রম। এই ল্যান্ডারটিতে যার চারটি পেলোড ছিল। যার মাধ্যমে চাঁদের গতিপ্রকৃতির সব রিপোর্ট পায় ইসরো। প্রপালেশন সিস্টেমের মাধ্যমে সব ধরনের বাধা পেরিয়ে যায় চন্দ্রযান ৩। ল্যান্ডার বিক্রম থেকে চাঁদের মাটিতে পা রাখে রোভার প্রজ্ঞান। এই রোভারের মাধ্যমেই চাঁদ সম্পর্কে অজানা তথ্য খুঁজে বের করেছে ইসরো।

প্রথম চন্দ্র অভিযানের ২০ বছর পর, ২০২৮ সালে নতুন স্ট্র্যাটেজি নিয়ে চাঁদের মাটিতে পা রাখবে চন্দ্রযান ৪। এবার আর চাঁদের বুকে সলিল সমাধি নয়। চাঁদের মাটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিরাপদে ফিরে আসবে এই মহাকাশযান। ইসরোর মুকুটে নয়া পালক জুড়তে চলেছে। প্রস্তুতি অনেক আগেই শুরু করে দিয়েছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ২০২৮-এ এই মিশন করবে ইসরো।

ইসরোর লক্ষ্য, ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদের মাটিতে পা রাখবে মানুষ। সেই লক্ষ্যেই ধাপে ধাপে এগোচ্ছে ইসরো। মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত যে কতটা এগিয়েছে, তা চন্দ্রযান ৩ মিশনেই দেখেছে বিশ্ব। এই মিশন গতবারের থেকে বেশি কঠিন হতে চলেছে। চাঁদের কক্ষপথে নোঙর করতে হবে চন্দ্রযানকে। মাটিতে নেমে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। এরপর চাঁদের বায়ুমন্ডল থেকে বেরোনো ও ফের পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ। প্রত্যেক পদক্ষেপ বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন হতে চলেছে।

এবার চন্দ্রযান ৪ দুটি ধাপে উৎক্ষেপণ করা হবে। এলভিএম ৩ ও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পিএসএলভি ব্যবহার করা হবে। পাঁচটি আলাদা আলাদা রোভার ও রেঞ্জার থাকবে। অভিযান সফল হলে আমেরিকার অ্যাপেলোর অভিযান, সোভিয়েত ইউনিয়নের লুনা ও চিনের চ্যাং অভিযানের সঙ্গে একই সারিতে উঠে আসবে ভারত। চন্দ্রযান ছাড়াও গগনযান প্রকল্প, ইন্ডিয়ান স্পেস স্টেশন তৈরির প্রস্তাব নিয়ে ইসরোকে ছাড়পত্র দিয়েছে ইসরো। ইসরো প্রধান এস সোমনাথ সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, চন্দ্রযান ৪ মিশন শুধু চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে না। সেখান থেকে মাটি, পাথরের নমুনা সংগ্রহ করে দেশেও আনবে। পৃথিবীর ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় যে কক্ষপথ আছে, সেখানে ২০৩৫ সালের মধ্যে তৈরি হবে ভারতের স্পেস স্টেশন। অ্যাস্ট্রোবায়োলজি ও মাইক্রোগ্র্যাভিটি সংক্রান্ত গবেষণা ওই স্পেস স্টেশনে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *