দাবায় বিশ্বরেকর্ড সাড়ে তিন বছরের অনীশ সরকারের

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: তিন বছরের দাবাড়ু কিনা ভেঙে দিল ভারতেরই তেজস তিওয়ারির রেকর্ড! সে পাঁচ বছর বয়সে ফিডে রেটিং পেয়েছিল। কৈখালির অনীশকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত তার কোচ দিব্যেন্দু বড়ুয়া। ৩ বছর ৮ মাস ১৮ দিনের অনীশ সরকারের এটাই দাবি যে সে ফিডে রেটিং পেয়ে বিশ্বরেকর্ড করবে।
গত বছর পুজোর সময় অনীশের মামা তাকে উপহার দিয়েছিলেন দাবা বোর্ড। এই বছর জানুয়ারি মাসে তিন বছরে পা দেওয়া অনীশের সেই উপহার বোধ হয় জীবনটাই বদলে দিল। সেন্ট জেমস স্কুলের লোয়ার নার্সারির ছাত্র অঙ্ক কষতে ভালবাসে। সেই কারণেই তাকে দাবা বোর্ড উপহার দেন মামা। পরিবারের লোকজনের মনে হয়েছিল দাবা খেলে অনীশের বুদ্ধি আরও ক্ষুরধার হবে। সেই ভাবনায় যে ভুল ছিল না তা প্রমাণ করে দিয়েছে সে। এখন দাবাই তার ধ্যানজ্ঞান। সারা দিন কেটে যায় পড়াশোনা আর দাবা নিয়েই।
অনীশ ১৫৫৫ ফিডে এলো রেটিং পেয়েছে। রাজ্যের অনূর্ধ্ব-৯ দাবা প্রতিযোগিতায় রেটিং থাকা দুই দাবাড়ুকে হারিয়ে দেয় সে। তাতেই বাজিমাত। তার থেকে বয়সে প্রায় ছ’বছর বড় দুই দাবাড়ুকে হারিয়ে চমকে দেয় অনীশ। সে এতই ছোট যে চেয়ার বসে ঘুঁটিতে হাত পায় না। চেয়ারের উপর হাঁটু মুড়ে বসে খেলতে হয়। উচ্চতা কম হলেও ইতিমধ্যেই আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে তাকে নিয়ে।
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম অনীশের। বাবা স্কুলে অঙ্কের শিক্ষক। মা গৃহবধূ। অনীশকে নিয়েই সময় কাটে মায়ের। নাম প্রকাশ্যে আনতে অনিচ্ছুক তাঁরা। ছেলের কৃতিত্বে উচ্ছ্বসিত হলেও চান না তাঁদের পরিচয় জানুক সকলে। নেপথ্যে থেকেই ছেলেকে এগিয়ে দিতে চাইছেন তাঁরা।
ছাত্রের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দিব্যেন্দু। বাংলার গ্র্যান্ডমাস্টার প্রথমে অনীশকে নিতে চাননি। কারণ অ্যাকাডেমিতে পাঁচ বছরের কম বয়সি কাউকে নেওয়া হয় না। কিন্তু দিব্যেন্দু অবাক হয়ে যান অনীশের খেলা দেখে। অ্যাকাডেমিতে নেওয়ার আগে তার পরীক্ষা নিয়েছিলেন দিব্যেন্দু। সব পরীক্ষাতেই পাশ করে অনীশ। এখন তো কোচকেই বিভিন্ন পরীক্ষার মুখে ফেলে দেয় সে।
৩ বছর ৮ মাস ১৮ দিন বয়সে পাওয়া সাফল্যে অনীশকে নিয়ে খুশি সকলেই। দিব্যেন্দু বললেন, “ও বিস্ময় বালক। মাত্র ক’মাস হয়েছে খেলছে। তাতেই বুঝিয়ে দিচ্ছে ও কতটা প্রতিভাধর। তবে ফিডে রেটিং পাওয়াটাই তো সব নয়। এখন অনেকটা পথ যাওয়া বাকি। অনীশ সেটা পারবে। ওর শেখার ইচ্ছা আছে। এখন ও জানতে চায় বিভিন্ন জিনিস। শিখতে চায়। আমাকে জিজ্ঞেস করে দাবা খেলার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শব্দের মানে। ও হয়তো এখনই সবটা বোঝে না। কিন্তু বোঝার ইচ্ছেটা রয়েছে পুরো। দিনে সাত-আট ঘণ্টা অ্যাকাডেমিতে কাটায়। খেলা ছেড়ে উঠতে চায় না। আমি মাঝেমাঝে বাড়িতেও ডেকে নিই। আশা করছি আরও অনেক সাফল্য পাবে অনীশ।”

error: Content is protected !!