গৌরীদেবীর মুখের আদলেই লক্ষ্মীর মূল গড়িয়েছিলেন উত্তমকুমার

📝শুভদীপ রায় চৌধুরী, Todays Story: গতকালের পাশাপাশি আজও গৃহলক্ষ্মীর আরাধনায় মত্ত গোটা বাংলা। গ্রাম বাংলার পাশাপাশি মহানগরের প্রতিটি বাড়িতেই কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। যে যাঁর সাধ্যমত আয়োজন করেন। মূলত, গৃহস্থ বাড়িতে সুখ-সমৃদ্ধি ও চতুবর্গ ফলপ্রাপ্তির জন্যই দেবী লক্ষ্মীর পুজো করেন সকলে। লক্ষ্মী মানেই শ্রী, তাই বাড়ির চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে সংসারের সুখও বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেলেব সকলেই সকাল থেকে সুন্দর ভাবে আলপনা দেওয়া, ঠাকুর সাজানো, পুজোর আয়োজন কিংবা ভোগ রান্নায় ব্যস্ত থাকেনী। টলিউডের একাধিক তারকাদের বাড়িতেই লক্ষ্মীপুজো হয়। বলাবাহুল্য, এই লক্ষ্মী পুজোর আয়োজনের কথা বললেই প্রথমেই উত্তম কুমারের পরিবারের কথা মনে আসে। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মহানায়কের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী দেবলীনা কুমার।
প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন থেকেই চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে শুরু হয় চরম ব্যস্ততা। তবে শ্বশুরবাড়ির পাশাপাশি নিজের বাপের বাড়ির পুজোর দায়িত্বও নিয়ে থাকেন অভিনেত্রী দেবলীনা। প্রসঙ্গত, চট্টোপাধ্যায় বাড়ির লক্ষ্মী প্রতিমা কিন্তু আর পাঁচটা প্রতিমার মতো নয়। ভবানীপুরের এই বাড়ির প্রতিমা বানানো হয় বাড়ির-ই গৃহলক্ষ্মীর মুখের আদলে। সেকালে গৌরীদেবীর মুখের আদলেই লক্ষ্মীর মুখ গড়ে পুজো শুরু করেন উত্তম কুমার, এখনও সেই ধারা অব্যহত। সে সময়ে ‘যদুভট্ট’ ছবির শুটিংয়ে মূর্তি গড়েন শিল্পী নিরঞ্জন পাল। শুটিং ফ্লোরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে সেই দৃশ্য চোখে পড়ে উত্তমের। তিনি শিল্পীকে বাড়িতে ডেকে পাঠান লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ার জন্য। শিল্পী বাড়িতে পৌঁছাতে উত্তমকুমারের খোঁজ করতে দেখলেন, গৌরীদেবী ঘর মুছছেন। তিনি ঘোমটার ফাঁক থেকে এক ঝলক তাকিয়ে শিল্পীকে বসতে বললেন আর তারপরই উত্তমকুমারকে ডেকে দিলেন। কিন্তু ওই মুহূর্তেই শিল্পীর চোখে মা লক্ষ্মীর ছবি আঁকা হয়ে গেল। তিনি ছাঁচ ভেঙে গৌরীদেবীর মুখের আদলেই লক্ষ্মীমূর্তি গড়লেন। সেই থেকে আজও ভবানীপুরে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির লক্ষ্মী প্রতিমার মুখের গড়ন একই রকম হয়ে আসছে।
প্রতিবারই লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে সকলের নজর থাকে উত্তম কুমারের বাড়ির পুজোর দিকে। বাড়ির পুজোর বিষয়ে অভিনেত্রী দেবলীনা জানিয়েছেন, ‘প্রতিবছর যেমন আয়োজন থাকে, তেমনই থাকবে। প্রত্যেকেই মাকে ভালবেসে দর্শন করতে আসবেন। তাই পুজোয় আয়োজন কিংবা আপ্যায়নে কোনও খামতি রাখতে চাই না। আমাদের পরিবারের তরফ থেকে যে বিশাল আয়োজন থাকে এমনটা নয়। তবে পুজো পুজোর মতনই হবে। মা বছরে একবার আসেন, তাই যথাসম্ভব চেষ্টা করব মন প্রাণ দিয়ে পুজো করার। প্রতিবছর ঠিক যেমনটা হয়, এবছর আলাদা কিছু নয়।’