বুদ্ধবাবু চেন স্মোকার ছিলেন, বাঁধিয়েছিলেন সিওপিডি! ঠিক কী হয় এই রোগে

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ অর্থাৎ COPD– ফুসফুসের এই অসুখ বহু বছর ধরে সঙ্গী ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। প্রথমে হাল্কা কাশি, অল্প শ্বাসকষ্ট। এর পরে বুকের ভেতর দলা পাকানো একটা ব্যথা। কাশির দমক বাড়লে শ্বাসের সমস্যাও চাগিয়ে ওঠা। এই ধরনের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে বহু বছর কাটিয়েছেন তিনি। এবং দীর্ঘ রোগভোগের পর অবশেষে মৃত্যু।

সিওপিডি-র নানা কারণ আছে। তবে প্রথম ও প্রধান কারণ ধূমপান। সেই কারণেই একে ‘স্মোকিং ডিজিজ’ও বলা হয়। এই অভ্যেস বরাবরই ছিল বুদ্ধবাবুর। চেন স্মোকার ছিলেন তিনি। কাজে থাকলে বা বাড়িতে, ঘনিষ্ঠরা বলতেন, কখনওই সিগারেট ছাড়া দেখা যেত না তাঁকে। শুভাকাঙ্ক্ষীদের বহু অনুরোধেও কখনও বন্ধ করেননি ধূমপান। পছন্দের ব্র্যান্ড ছিল ‘৫৫৫’। পরিবার সূত্রের খবর, একটু বয়স হওয়ার পরে প্রায়ই বুকে ঘনঘন কফ জমে যাচ্ছে তাই অবস্থা হতো। সর্দি-কাশি হলে কমতেই চাইত না। অল্প ঠান্ডা লাগলেই নাক বন্ধ, কাশির বেগ যেন বুক ঠেলে উঠতে চাইত।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে চিকিৎসকরা রীতিমতো নিদান দিয়েছিলেন, ছাড়তেই হবে সিগারেট। ফুসফুসের যা অবস্থা হয়েছে, তাতে আর কোনও উপায় নেই। তবে সে কথাও শোনেননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বলেছিলেন, চেষ্টা করলে একটু কমাতে পারবেন, আর কী করা যেতে পারে জানতে চেয়েছিলেন, তবে পুরোপুরি সিগারেট ছাড়া অসম্ভব বলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন।

তবে ২০১৭ সালে এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন, অবশেষে ধূমপান ছেড়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কারণ ততদিনে শ্বাসের সমস্যা ক্রমশ বদলে গেছিল ক্রনিক শ্বাসকষ্টে। সিগারেট ধরিয়ে টানার ক্ষমতা ছিল না। এক সময় প্রয়োজন হয়েছিল কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের। বেশ কয়েকবার অসুবিধা হওয়ার পরে ২০১৮ সালে বাড়িতেই পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয় বুদ্ধবাবুর জন্য। ২৪ ঘণ্টাই নাকে লাগানো থাকত সেই অক্সিজেনের নল। অর্থাৎ গত প্রায় ৫ বছর ধরে স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিতেই পারেননি তিনি।

error: Content is protected !!