‘মশকরা করবেন না!’ আন্দোলনকারীদের খাওয়াচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ, ছবি দেখে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: ‘জাতিকে নিয়ে মশকরা করবেন না!’ আজ, সোমবার বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের এক মামলার শুনানিতে পুলিশের উদ্দেশে এমনই মন্তব্য করেছে সে দেশের হাইকোর্ট।

বাংলাশ জুড়ে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশ জারি করার জন্য দায়ের করা এক রিটের শুনানি চলছিল। দাবি ছিল, বাংলাদেশ পুলিশের ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ বা ডিবি যে ছ’জন কোঅর্ডিনেটরকে আটক করেছে, তাঁদেরও অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিতে হবে। সেই শুনানিরই এক পর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘টিভিতে দেখা গেছে আটক হওয়া ছ’জন সমন্বয়ক কাঁটাচামচ দিয়ে চাউমিন খাচ্ছেন।’ একথা শুনেই আদালত রেগে যায়। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চ বলে, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা করবেন না। যাকে খুশি একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’

আসলে, পুলিশি হেফাজতে ওই ছয় সমন্বায়কের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনও শোনা গেছে, পুলিশ জোর করে আন্দোলন থামানোর বিবৃতি আদায় করেছে তাঁদের থেকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, এসব গুজব। ডিবি একটি আস্থার জায়গা, সেখানে জোর করে বিবৃতি নেওয়া হয় না। উল্টে সরকার যেখানে আন্দোলনের সব দাবি মেনেই নিয়েছে, সেখানে আন্দোলনকারীরাই লিখিতভাবে জানিয়েছেন, আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা। ওই ছ’জন সমন্বয়ককেও শিগগিরই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকেই পোস্ট করা হয় সমন্বয়কদের টেবিলে বসে খাওয়ানোর ওই ছবিটি। ছবির ক্যাপশনে হারুন লেখেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই ওদের ডিবি কার্যালয়ে এনে তাদের সঙ্গে কথা বললাম।’ বস্তুত, পুলিশের তরফে এই ছবি দিয়ে নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল, সমন্বয়কদের নিরাপত্তায় কোনও খামতি নেই, বরং তাঁরা যত্নেই আছেন পুলিশি হেফাজতে। কিন্তু সেই ছবির ফল হয়েছে উল্টো। আদালত ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছে, ‘মশকরা করবেন না।’