📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে কার্যত উত্তাল বাংলাদেশ। তার সরাসরি প্রভাব পড়ল মাছের বাজারেও। জানা গিয়েছে, গত তিন-চারদিন ধরেই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে মাছ আমদানি বন্ধ। বন্ধ ইলিশের বিপুল যোগানও। যার ফলে কার্যত মাথায় হাত মাছ ব্যবসায়ীদের। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক কোটির লোকসানের সম্মুখীনও হতে হয়েছে তাঁদের। অবিলম্বে আমদানি শুরু না হলে এই লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়বে। এপার বাংলার মানুষের পাতে পড়বে মাছের টান। প্রতি দিন প্রায় ১০০ টন ট্যাংরা, ভেটকি, পাবদা, পাঙাস, পমফ্রেট-সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হয় হাওড়ার মাছের বাজারে। তা এখন বন্ধ।
বাংলাদেশে কার্ফু জারি হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় এপারের মাছ ব্যবসায়ীরা অনলাইনে ওখানকার ব্যবসায়ীদের টাকা পাঠাতে পারছেন না। নতুন অর্ডারও দিতে পারছেন না। বাংলাদেশ থেকে এ রাজ্যে গাড়িও কম আসছে। ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদএর কথায়, “বাংলাদেশে অশান্তি জারি থাকলে এপারের মাছ ব্যবসায়ীদের বিপদ আরও বাড়বে। বর্ষাকালে বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ আমদানিও না হতে পারে এই একই কারণে”। উল্লেখ্য, যত দিন যাচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেই ভারতে ফিরলেন ৩০০-র বেশি পড়ুয়া। সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিপুরার আখুরা এবং মেঘালয়ের ডাউকি বর্ডার দিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও কোচবিহার বর্ডার দিয়েও ৩৩ জন পড়ুয়া ভারতে প্রবেশ করেছেন। ওই পড়ুয়াদের মধ্যে অধিকাংশই মেডিক্যাল পড়ুয়া। তাঁরা মূলত উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মেঘালয় ও জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি বাংলাদেশে। সেখানকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা শতাধিক। ভুটান ও নেপালেরও কয়েকজন পড়ুয়াও এদিন ফিরে আসেন। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঢাকায় নামানো হয়েছে সেনা ট্যাঙ্ক। বিভিন্ন এলাকায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সিংহভাগ এলাকাতেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। জারি করা হয়েছে কার্ফু। হেলিকপ্টারেও নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে খবর। এর আগে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের রাস্তায় সেনা ট্যাঙ্ক নেমেছিল। সেই সময় আন্দোলন করেছিলেন সীমান্তরক্ষী বিডিআর বাহিনী। দীর্ঘদিন ধরে সেই আন্দোলন চলেছিল।
BBC-র খবর অনুযায়ী কার্ফু জারির পর থেকে ঢাকার রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি ছিল অনেক কম। কয়েকটি এলাকায় দোকান খোলা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই সেগুলি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও শাক-সবজি, মাছ-মাংসের দোকান খোলা ছিল অন্যদিনের মতোই। অ্যাম্বুল্যান্স এবং পুলিশের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও যানবাহন রাস্তায় দেখা যায়নি।এদিকে শুক্রবার রাতে নরসিংদীর জেলা কারাগারে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে সেই ঘটনার পর প্রায় ৮০০ বন্দি সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।