📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ থেকে পড়ুয়াদের ফেরাতে রাজ্য সরকার সদা সক্রিয় বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, রবিবার এ বিষয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একটি বার্তা পোস্ট করে তিনি জানান, ‘যাঁরা ফিরছেন এই বাংলায়, তাঁদের সমস্তরকম সাহায্য ও সহায়তা করার জন্য রাজ্য প্রশাসনকে বলেছি আমি।’ মুখ্যমন্ত্রী এদিন লেখেন, প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আজ হিলি সীমান্তে পৌঁছেছেন এবং তাঁদের বেশিরভাগই নিরাপদে নিজের নিজের গন্তব্যে চলে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল, সেই সমস্তরকম সাহায্য তাঁদের করা হয়েছে। তিনি বার্তা দেন, বিপদের মুখে একতাই শক্তি।
গতকালই নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ অবস্থার দিকে বিশেষ নজর রাজ্য সরকারেরও। এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লির সঙ্গে কথা হয়েছে নবান্নর। রাজ্যের কেউ ওদেশে আটকে রয়েছেন কিনা, তা দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জিও জানিয়েছে রাজ্য। পাশাপাশি দিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্সিয়াল কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগে থাকার। জানা যাচ্ছে, দু’দেশের হাই কমিশনের সহযোগিতায় এখনও পর্যন্ত ৯৯৮ জন পড়ুয়াকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চার হাজারের বেশি ভারতীয় পড়ুয়া আটকে রয়েছে। আকাশপথে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে দু’দেশের হাইকমিশন সব ধরনের চেষ্টা করছে।
সংবাদসংস্থা সূত্রের খবর, ফিরে আসাদের মধ্যে সিংহভাগই ডাক্তারির ছাত্র এবং তাদের বেশিরভাগই উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মেঘালয় এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, ত্রিপুরার আগরতলার কাছে আখুরাতে আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর এবং মেঘালয়ের ডাউকিতে আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন প্রায় এক হাজার পড়ুয়ারা। অন্যদিকে শুক্রবারই কোচবিহারের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জ গেট দিয়ে বাংলাদেশের রংপুর মেডিক্যাল কলেজের ৩৩ জন ছাত্রছাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ছ’জন ভারতীয়। ১৮ জন ভুটানের এবং নেপালের ৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছেন।
এই অবস্থায় আজ, একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ মঞ্চে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় বাংলাদেশি উপ-দূতাবাসের দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নাগরিক সমাজের একাংশ। সমাজমাধ্যমে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে কার্যত যুযুধান বিভিন্ন পক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে যদি কেউ আটকে থাকেন, আমরা তাঁদের ফেরাবার ব্যবস্থা করব। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারি না। ওটা যা বলার ভারত সরকার বলবে। আমি শুধু এইটুকু বলতে পারি, বিপদে পড়ে কেউ যদি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে, আমরা তাঁদের পাশে থাকব। এটা আমার কথা নয়। এটায় রাষ্ট্রপুঞ্জের কনভেনশন আছে। যেখানে বলা আছে, বিপদে পড়ে কেউ আশ্রয় চাইলে তাঁকে আশ্রয় দিতে হবে।” এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, “আমি একটাই কথা বলব। বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যেন কোনও প্ররোচনাতে না যাই। আমাদের সহমর্মিতা আছে। আমাদের দুঃখ আছে। কিন্তু এর বেশি কিছু বলতে পারি না।” একটি অঙ্গরাজ্যের প্রধান হিসেবে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যে তাঁর কথা বলা অনুচিত, এই আন্তর্জাতিক প্রোটোকলের কথাই মনে করিয়ে দিতে চাইলেন তিনি।