কোচিং বিদায়বেলা রাঙিয়ে দিলেন দ্রাবিড়, যে মাটিতে স্বপ্ন ভেঙেছিল, সেই দেশেই স্বপ্নপূরণ

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: জীবন এমনই, একটা সময় সব কেড়ে নেবে, আবার সব ফিরিয়েও দেবে। রাহুল শরথ দ্রাবিড়ের ক্ষেত্রে সেটি হুবহু মিলে যায়। ২০০৭ সালে গ্রেগ চ্যাপেলের কোচিংয়ে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে প্রথম রাউন্ডেই বিদায় হয়ে গিয়েছিল রাহুলের ভারতের। সেইসময় তাঁরর নেতৃত্ব নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, দ্রাবিড় ভাল ক্রিকেটার হতে পারেন, তাঁর দ্বারা ভাল অধিনায়ক হওয়া সম্ভব নয়! তিনি আর যাইহোক দক্ষ নেতা কোনওদিনই নন।

তারপর ১৭ বছর কেটে গিয়েছে। চ্যাপেলও তারপরে বিদায় নিয়েছেন ভারত থেকে, দ্রাবিড়ের হাত থেকে অধিনায়কের ব্যাটন চলে গিয়েছে এম এস ধোনির হাতে। কিন্তু মনের কোনে যন্ত্রণাটা ছিলই। সবসময় একটা কষ্ট মনের ভিতর বহন করে বেড়াতেন, আমার আর বিশ্বজয়ী দলের সদস্য হওয়া হল না! গতবছর ১৯ নভেম্বরে আমদাবাদে ভেসে উঠেছিল দ্রাবিড়ের শূন্য দৃষ্টি। দূরে প্যাট কামিন্সের দল বিশ্বকাপ নিয়ে আনন্দ করছে, আর রাহুলের মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ঠ।

সেইসময় ক্রিকেট দেবতা দ্রাবিড়ের হাতে কাপ দিয়েও দেননি। অবশেষে ২৯ জুন ভারতের রাত (সেইসময় অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভরা দুপুর) স্মরণীয় হয়ে থাকল দ্রাবিড় প্রেমীদের কাছে। এতদিনের মুখ বেজার করা অবয়বে হাসি ফুটল। দ্রাবিড়ের হাতে রোহিতরা কাপ দিতে এমনভাবে উচ্ছ্বাসভাবে প্রকাশ করলেন, মুম্বই কমেন্ট্রি বক্সে সিধু, ইরফানরাও অবাক। এমন দ্রাবিড়কে তাঁরা কোনওদিন দেখেননি। নির্লিপ্ত দ্রাবিড় কাপ নিয়ে ঝাঁকাচ্ছেন, মুখে বলছেন, ‘‘আমি পেরেছি, আমরা পেরেছি!’’

তিনি ভারতের কোচের পদ ছেড়ে দিচ্ছেন। মেসির হাতে বিশ্বকাপ না হলে যেমন অতৃপ্ত থেকে যেত দুনিয়া, তেমনি দ্রাবিড়ের মতো ক্রিকেট সাধকের হাতে বিশ্বজয়ের ট্রফি না থাকলে জীবন পূর্ণতা পেত না। তিনি আজীবনের ক্রিকেট পূজারী, তিনি ক্রিকেট নিয়ে বাঁচেন, ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্নও দেখেন। তাই শনিবারের এই দিন ভারতীয় ক্রিকেটে এক মাইলফলক হয়ে থাকবে। দ্রাবিড়কে আর কোনওদিন বলা যাবে না তাঁর হাতে কাপ ওঠেনি। হয়তো দলের নেতা ও ক্রিকেটার হিসেবে পারেননি, কোচ হিসেবে তো পারলেন। সবাই একদিন একবাক্যে মানবেন, গত তিনবছর ভারতীয় ক্রিকেটের কোচিংয়ের ভার ঠিক লোকের হাতেই ছিল!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *