📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় হয় ফলহারিণী কালী পুজো, এমন দিনে বিভিন্ন অশান্তি, মাহামারী, বাধা, বিঘ্ন, থেকে মুক্তি লাভ করতে ফলহারিণী অমাবস্যার দিন মা কালীকে অর্পণ করতে হয় যেকোনও ফল। শাস্ত্রজ্ঞদের মতে মাকে তুষ্ট করতে ফল দিয়েই তাঁর পুজো করতে হবে এই ফলহারিণী আমাবস্যায় জ্যৈষ্ঠমাসে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি নানারকম ফলের সময়ে ফল পাওয়া যায়। সাধক তাঁর ইষ্টদেবীকে বিভিন্ন ফল দিয়ে প্রসাদ নিবেদন করে থাকেন।
এ বছর জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথি শুরু হবে ৫ জুন বুধবার সন্ধ্যা ৭.১৫ মিনিটে৷ অমাবস্যা তিথি থাকবে ৬ জুন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫.৫৩ মিনিট পর্যন্ত৷
কেবল গাছের ফল নয়, এই দিন মায়ের চরণে সাধকেরা তার কর্ম ফল অর্পন করে থাকেন মোক্ষফল প্রাপ্তির জন্য। তাই এই দিনেই মায়ের চরণে পাপ-পূণ্যের ফল অর্থাৎ কর্মফল অর্পণ করতে হয় মোক্ষফল লাভের আশায় শাস্ত্রে বলা হয়, জীবনই সর্বস্ব। অর্থাৎ একদিকে ফলহারিণী যা সাধকের কর্মফল হরণ করেন। অপর দিকে কর্মফল হরণ করে সাধককে তাঁর অভীষ্টফল, মোক্ষফল প্রদান করেন।
বাঙালি জীবনে ফলহারিণী কালী পুজোর তাৎপর্য লুকিয়ে রয়েছে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ এই দিনেই তাঁর স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন জগৎ কল্যাণের জন্য। ১২৮০ বঙ্গাব্দে জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিনি দক্ষিণেশ্বরে আদ্যাশক্তি সগুণরূপের পুজো করেছিলেন। তিনি ফলহারিণী কালী পুজোর দিন শ্রীমা সারদাকে “ষোড়শীরূপে” পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে এই পুজো ‘ষোড়শী’ পুজো নামে পরিচিত। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর মোক্ষপ্রাপ্তির জন্য এই নিয়মে পুজো করলেও এই দিনটিতে হিন্দু ধর্মাবলাম্বী মানুষ নানাবিধ ফল দিয়ে কালীর পুজো করে থাকেন।
কার্তিক মাসে দক্ষিণাকালীর পুজোয় সকলের সার্বিক কল্যাণ হয়। আর ফলহারিণী কালীপুজো করলে আমাদের প্রত্যেকের বিদ্যা, কর্ম ও অর্থভাগ্যের উন্নতি ঘটে। প্রেম-প্রণয়ে বাধা দূর হয়। দাম্পত্য সাংসারিক জীবনেও সুখশান্তি লাভ হয় ও সাধকের জীবনে মোক্ষফল প্রাপ্তি হয়, এমনটাই বিশ্বাস।