📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: ম্যাচ তখন খাতায়-কলমে শেষ হয়নি। কিন্তু ভবিতব্য নির্ধারিত। অষ্টাদশ এডিশনের আইপিএল জিততে চলেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথমবারের জন্য।
বাইশ গজে বল হাতে জশ হেজলউড। থেকে থেকে অস্ট্রেলীয় পেসারের পিঠ চাপড়ে যাচ্ছেন রজত পাটিদার। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে দলকে চাঙ্গা করে চলেছেন জিতেশ শর্মা।
এতকিছুর মধ্যে বিরাট কই?
প্রশ্নটা সবে জাগতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ক্যামেরাম্যানের লেন্স তাক করল বাউন্ডারি লাইন। দড়ির পেছনে জনগর্জন। সামনে দাঁড়িয়ে বিরাট কোহলি। মাথাটা একটু ঝুঁকল। পরক্ষণে তুলে ফেললেন। আর নজরে এল ভিজে যাওয়া চোখের পাতা। অকম্পিত মুখ। ভেতরে অনুভূতির বারুদ ততক্ষণে ফেটে পড়েছে। বোঝা যাচ্ছে, কোনওমতে আবেগের উচ্ছ্বাস চেপে নিজেকে সামলে রেখেছেন।
শেষ বল অর্থহীনভাবে বাউন্ডারির বাইরে যেতেই মাটিতে হাঁটু মুড়ে বসে পড়লেন বিরাট। শরীর কাঁপছে। দু’হাত ধরে চেপে রেখেছেন মুখ। ছুটে আসলেন সতীর্থরা। জড়িয়ে ধরলেন। হৃদয়চাপা কান্না বদলে গেল প্রাণখোলা হাসিতে। বেদনা… উচ্ছ্বাসে!
এক বছর, দু’বছর নয়। দীর্ঘ আঠারো বছর পরিশ্রম আর সংযমের ফসল এই ট্রফি। লড়াই পরাক্রমী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে, লড়াই নিজেরও বিরুদ্ধে! কেরিয়ারের বসন্ত যখন, দু’হাতে খুলে রান করছেন, ক্রিকেটের সমস্ত ফর্ম্যাটে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছেন তিনি, তখন নিলামে টাকার পাহাড় নিয়ে হাজির হয় হরেক ফ্র্যাঞ্চাইজি। প্রতি বছর।
সবাই জানে বিরাট-ই ট্রাম্পকার্ড। তিনিই গেমচেঞ্জার। ফাইনালে উঠেও ট্রফি অধরা থাকলে, সেমিফাইনাল ডিঙিয়ে ফাইনালের সিঁড়ি ফসকালে ছোট্ট অথচ গুরুতর ফাঁকটি ভরাট করবেন একজন… তিনি বিরাট কোহলি।
চাইলেই অন্য দলে যেতে পারতেন। চাইলেই পারতেন নামের পাশে ‘সফলতম’ তকমা আরও সহজে লাগিয়ে নিতে। কী নেই কেরিয়ার ক্যাবিনেটে? ওয়ান ডে, টি-২০ মিলয়ে দু’দুটো বিশ্বকাপ, দুটো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়, বর্ষসেরা ক্রিকেটারের তকমা, র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দখল—একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটারের ‘কিংবদন্তি’ হওয়ার জন্য যে যে ধাপ পার করা জরুরি, সেই সমস্ত স্তর পেরিয়ে এসেছেন বিরাট। এতদিন অধরা ছিল আইপিএল। ইচ্ছে করলেই অন্য যে কোনও শক্তিশালী দলে নাম লিখিয়ে খেতাব জিততে পারতেন।