‘রণে বনে জলে জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়বে, আমাকে স্মরণ করবে। আমি রক্ষা করব।’
📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: বলেছিলেন বাবা লোকনাথ। ভক্তরা আজও একথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। বিপদে পড়লে বাবা লোকনাথের কাছেই মুক্তির উপায় খোঁজেন। লোকনাথ ব্রহ্মচারী অন্য সাধকদের থেকে একেবারে আলাদা ছিলেন। সরল সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। তিনি সব ভক্তকে সমান চোখে দেখতেন। স্নেহ ভালবাসায় ভক্তদের বুকে টেনে নিতেন বাবা। তাদের জীবনের শিক্ষায় দীক্ষিত করতেন।
কী সেই শিক্ষা ?
লোকনাথ বাবা সবসময় বলতেন, ‘দিনের শেষে যখন ঘুমোতে যাবে তখন ভেবে দেখবে সারাদিন কী কী কাজ করেছ। কোনটা ঠিক কোনটা ভুল নিজেই নিজের বিচার-বুদ্ধিতে বুঝে নিতে পারবে। রোজ এটা করা খুব জরুরি।’ সেলফ আসেসমেন্টের কথা এমন সহজ ভাষায় সরল করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন লোকনাথ ব্রহ্মচারী।
বাবা ছিলেন ত্রিকালদর্শী। তাই এ যুগের সমস্যাও ছিল তাঁর নখদর্পণে। অর্থই যে সব অনর্থের মূল তা বুঝিয়েছেন বারংবার। জগতের সব কলহ কলুষ ,হানাহানির কারণ অর্থ ও প্রতিপত্তির লালসা। মুক্তির পথ দেখিয়ে বাবা বলেছেন, ‘বাক্যবাণ,বন্ধু বিচ্ছেদ বাণ ও বিত্ত বিচ্ছেদ বাণ-এই তিন বাণকে সহ্য করতে পারলে মৃত্যুকেও উপেক্ষা করা যায় ‘।
‘আমার চরণ নয়, আচরণ ধর তোরা’
লোকনাথ বাবা নিজে অত্যন্ত সাদামাঠা জীবন যাপন করতেন। ভক্তদেরও তাঁকে অনুসরণ করতে বলতেন। ভোগের ক্ষেত্রেও অতি অল্পে সন্তুষ্ট তিনি। পোলাও পনির নয়, ভাত- ডাল -চচ্চড়ি বা খিচুড়ি’- লাবড়া -চাটনি,বা সবরকম সব্জি সেদ্ধ দিয়ে ভাত (বাল্যভোগ) তাঁর প্রিয় খাবার।
রোজের পুজোয় অল্প মিছরিতেই তুষ্ট বাবা লোকনাথ। ফলের মধ্যে কালোজাম আর তালশাঁস খেতে খুব ভালবাসতেন বাবা। আর ভালবাসতেন অমৃতি জিলিপি। সাদা বাতাসা, সাদা সন্দেশও তাঁর প্রিয়। কাজেই লোকনাথ বাবাকে তুষ্ট করতে কোনও আড়ম্বর অনুষ্ঠানের প্রয়োজন নেই।
‘জয় বাবা লোকনাথ’ মন্ত্রই জোগায় শক্তি
বাবা লোকনাথ শিবের অবতার। তাই শিবপুজো করে তারপর তাঁর পুজো করতে হয়। মহাদেব যেমন ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সব ভক্তকে অপার স্নেহে ভরিয়ে দেন,লোকনাথ বাবাও ঠিক সেইরকমই সন্তানের দুঃখ সহ্য করতে পারেন না। তাঁদের বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্য ব্যাকুল হন।
কারও জন্মকুণ্ডলীতে যদি রোগভোগ যোগ বা দারিদ্র যোগ থাকে, তাহলে প্রতি সোমবার বাবা লোকনাথের পুজো করলে রোগমুক্তি হয়,আর্থিক সঙ্গতি ফেরে -এমনই বিশ্বাস ভক্ত্কুলের।

