📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে অশান্তিতে নিহত পিতা–পুত্র এবং সুতিতে মৃত যুবকের বাড়িতে সোমবার গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, জামির মোল্লা–সহ বাম নেতারা। ধুলিয়ানে আক্রান্ত দাস পরিবারের স্কুলপড়ুয়া ছেলের পড়াশোনা এবং সুতিতে নিহত যুবকের স্ত্রী’র ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
বাম নেতৃত্বের এই তৎপরতার পরেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে তীব্র ভাষায় নিশানা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর প্রশ্ন, কারা ধুলিয়ানে পিতা–পুত্রকে খুন করেছে, কেন খুন করেছে— এ সবের উত্তর কেন সেলিম দিচ্ছেন না? শুভেন্দুর দাবি, ধুলিয়ানের নিহত পিতা–পুত্রের পদবি দাস বলেই তাঁদের খুন করা হয়েছে।সোমবার ধুলিয়ানের জাফরাবাদে দাঁড়িয়ে সেলিম দাবি করেছিলেন, ওই পিতা–পুত্র অশান্তি ঠেকাতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। সেলিমের এই বক্তব্যর সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। সিপিএম রাজ্য সম্পাদককে নিশানা করে মঙ্গলবার দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আপনার বক্তব্য ও পরিবারের লোকজনের দায়ের করা অভিযোগপত্রের বিবরণের মধ্যে সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।…ওঁরা নিশ্চয়ই বাড়ির মধ্যে থেকে দাঙ্গা আটকাচ্ছিলেন না। ওঁদের বাড়ি থেকে বের করে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এই জন্য নয় যে, ওঁরা বামপন্থী ছিলেন অথবা রাজনৈতিক শত্রুতা ছিল।’ সেলিম ‘ধর্মকে ক্রাচের মতো’ ব্যবহার করে তিনবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু।বিরোধী দলনেতার এই আক্রমণের মুখে সেলিম আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এ দিন বলেন, ‘ওই গ্রামে কোনও বিজেপি নেতা গিয়েছেন? বিজেপি কেন ধর্মের জন্য লাশ খোঁজে আর লাশ পেলে তার ধর্ম খোঁজে? গোটা গ্রাম বলেছে, পুলিশ যেহেতু আসেনি, যতক্ষণ পেরেছেন তাঁরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। ওখানে হিন্দু বসতি রয়েছে। সেখানে কেন শুধু দু’জনকে খুন করা হলো?’
সেলিমের দাবি, ‘গত (লোকসভা) ভোটেও সিপিএমের প্রাক্তন সদস্য হরগোবিন্দ দাস বুথ বসেছেন।’ শুভেন্দু–সহ বিজেপি নেতৃত্ব কেন সুতিতে অশান্তি চলাকালীন নিহত ইজাজ আহমেদকে নিয়ে কোনও কথা বলছেন না পাল্টা, এই প্রশ্ন তুলেছেন সেলিম। শুভেন্দু আবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রায়গঞ্জ, চণ্ডীতলা, মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের জনবিন্যাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, একটা বড় অংশের ভোটার হলো সংখ্যালঘু।’ বিরোধী দলনেতা এই খোঁচা খেয়ে সেলিম মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনায় ‘শুভেন্দু–ঘনিষ্ঠ’ অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তাঁর কথায়, ‘উত্তেজনা থাকা সত্ত্বেও শনিবার বিজেপিকে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।…শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এক অফিসার, শুভেন্দু (তৃণমূলে) থাকার সময়ে এঁর উত্থান হয়েছিল, এখন অন্য জায়গায় পোস্টিং হয়েছে। দলবদল করানো, বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা, মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য ইনি বিখ্যাত। তাঁরই সাঙ্গপাঙ্গরা এখনও মুর্শিদাবাদ জেলা চালাচ্ছেন।’পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে যাঁরা নির্বাচনের সময়ে ভোট লুট করে সেই বাহিনী অশান্তি করেছে বলে সেলিমের দাবি। শুভেন্দু বনাম সেলিমের এই ডুয়েলের মধ্যে ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে সংবিধান বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন ফাইল করেছে সিপিএম। দলের তরফে সেলিম এই রিট পিটিশন ফাইল করেছেন।