প্রথমবার বায়োপিকে জিৎ

📝 নিজস্ব সংবাদদাতা, Todays Story: পথিকৃৎ বসুর পরিচালনায় স্বাধীনতা সংগ্রামী অনন্ত সিংহের বায়োপিকে অভিনেতা জিৎ।

বরাবরই মসালা বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে অভিনয় করতে পছন্দ করেন জিৎ। এ বার অন্য ধারার ছবিতে দেখা যাবে অভিনেতাকে। প্রথম বার বায়োপিকে অভিনয় করবেন তিনি। পথিকৃৎ বসু পরিচালিত ‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে জিৎ। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অন্যতম নায়ক অনন্ত সিংহের চরিত্রে দেখা যাবে জিৎকে। এটি একটি পিরিয়ড ছবি হতে চলেছে।

অনন্ত সিংহের জীবন রহস্যে মোড়া। স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। মাস্টারদা ছিলেন তাঁর আদর্শ। ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ে অনন্তর জেলও হয়। সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ছাড়া পান। কিন্তু এই স্বাধীনতা চেয়েই কি লড়াই করেছিলেন? সেই প্রশ্ন ভাবাতে থাকে তাঁকে। দেশের দারিদ্র, দুর্নীতি, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ তাঁকে অস্থির করে তোলে। এর পরেই বড় বদল আসে অনন্তর জীবনে। তিনি ব্যাঙ্ক এবং বিত্তশালীদের সম্পত্তি লুঠ করতে থাকেন আর তা বিলিয়ে দেন সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে যান অনন্ত। পরিচালক পথিকৃৎ বলছিলেন, “ছবিতে আমরা একজন ভুলে যাওয়া নায়কের গল্প বলব। অনন্ত সিংহের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথা খুব কম মানুষই জানেন। তাঁর সাহস, আদর্শ আর আত্মত্যাগের কথা এই ছবির মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই।”

১৯৩০ থেকে ’৭০ সাল পর্যন্ত সময়কাল তুলে ধরা হবে ছবিতে। পথিকৃতের কথায়, “স্বাধীনতা সংগ্রামের পর্বটা বা চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘটনা আমরা খুব বেশি বিশদে দেখাব না। কারণ, এগুলো নিয়ে আগে অনেক ছবি হয়ে গিয়েছে। ষাট-সত্তরের দশকের ঘটনাবলির উপর ফোকাস করছি আমরা।” অনন্ত সিংহ নিজের জীবনের নানা ঘটনা লিখে গিয়েছেন তাঁর আত্মজীবনীতে। সেই আধারেই চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন নির্মাতারা। এই ছবিটির প্রযোজনা করছেন নন্দী মুভিজ়ের প্রদীপ কুমার নন্দী।

এই ছবিটি নিয়ে আশাবাদী জিৎ নিজেও। বললেন, “এর আগে কোনও দিন বায়োপিকে অভিনয় করিনি। ‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’ নিয়ে আমি বেশ উত্তেজিত।” ছবিতে জিতের লুকেও চমক থাকবে। সে সব নিয়েই এখন কাজ চলছে বলে জানালেন পরিচালক। ছবির গল্প শুনে জিতের প্রথম প্রতিক্রিয়া কী ছিল? “আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল জিৎদার সঙ্গে কাজ করব। এই গল্পটা নিয়ে ওর কাছে যাই। পুরোটা শোনার পর এক কথায় রাজি হয়ে যায়। আমি কেরিয়ার শুরু করেছিলাম সহকারী পরিচালক হিসেবে, সেই ছবির নায়ক ছিল জিৎদা। এখন তাকে আমি নির্দেশনা দেব, এটা আমার বড় পাওয়া।”

নেটফ্লিক্সের ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এ জিতের অভিনয় প্রশ‌ংসিত হয়েছে। বাংলায় তাঁর শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘বুমেরাং’। এর মধ্যে বাংলাদেশের পরিচালক রায়হান রাফীর নির্দেশনায় ‘লায়ন’এ অভিনয় করার কথা ছিল অভিনেতার। কিন্তু সেই ছবি এখন স্থগিত। আপাতত পথিকৃতের ছবিটির প্রস্তুতি নিচ্ছেন জিৎ। প্রসঙ্গত, অনেক দিন পরে বাংলায় নিজের প্রযোজনা সংস্থা ছাড়া অন্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন অভিনেতা।

যেহেতু এটি পিরিয়ড ছবি, তাই রিসার্চেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। ছবির প্রাক্‌-প্রযোজনা পর্ব চলছে। অন্যান্য চরিত্রের অভিনেতা বাছাই পর্ব এখনও চূড়ান্ত নয়। মাসখানেকের মধ্যেই ছবিটি ফ্লোরে যাবে।

error: Content is protected !!